Posts

ঢাকা শহরে একদিন আমি একদিনের জন্য একটা এম্বুলেন্স ভাড়া নিবো

ইদানিং আমার দিন কাটছে ড্রাইভিং-এ ড্রাইভিং-এ। এবং টের পাচ্ছি কেনো যারা সবসময় ড্রাইভ করে তারা সুযোগ পেলেই কেনো ড্রাইভ করতে চায়না। রেগুলার ড্রাইভ করতে থাকলে ড্রাইভিং'র প্রথম দিকের উত্তেজনাটা দ্রুত কমে যায়, তারপর একসময় পুরো বিষয়টাই বোরিং টাইপ হয়ে যায়। মানুষের ব্রেইন অতীব ইন্টারেষ্টিং একটা জিনিষ, ড্রাইভিং'র বোরিং-নেস কাটাতে গিয়ে আমার ব্রেইন একটা আইডিয়া বের করেছে, কিছু কাছের মানুষকে আমার ব্রেইন কল্পনা করে নেয় গাড়ীতে আমার পাশের সিটে বসে আছে। স্কিৎজোফ্রেনিক হয়ে যাচ্ছি নাকি আল্লাহই জানে! যেমন গতকাল হঠাৎ-ই মনে হলো আব্বু আমার পাশের সিটে বসে আছে, আর একটু পর পর অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করছে, বুড়ি, গাড়ি চালাইতে শিখছো কার থেকে? আব্বু, আপনাদের জামাইর কাছ থেকে। খুব ভালো, খুব ভালো। অমুক দেশে দেখছিলাম প্রচুর মেয়ে গাড়ি চালায়। আমি আড়চোখে দেখি আব্বুর চোখে মুখে খুশীর ছাপ, তার বড় মেয়ে তাকে গাড়ি চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছে, আব্বুর কি একটু প্রাউড প্রাউড লাগছে? বুঝা মুশকিল। আব্বু ঐসব মানুষদের একজন যাদের মনের ভিতরে কী আছে তা বাইরে থেকে বুঝতে চাওয়া প্রায় অসাধ্য একটা ব্যাপার। আব্বু আবার জিজ্ঞেস করে, ব...

একদিন আমি আর কমলাফুলি ঠিক বের হবো

Image
১ - আমাদের বন্ধু সার্কেলে এখন একমাত্র জীবিত ব্যক্তি একজনই আছে। ইয়ে সে জীবিত তার মানে এই না যে আমরা বাকীরা সব মৃত !  নচিকেতার ভাষায় আমরা জীবিতও না , মৃতও না , আমরা বিবাহিত !! তো জীবিত এই মানুষটারও এখন বিয়ের কথাবার্তার ঘন্টা বাঁজছে। বাঁজতে বাঁজতে চললো ঢুলি / ঢুলি গেলো কমলাফুলি … ধরে নিন এই জীবিতজনের নাম কমলাফুলি।

বৃষ্টি তুই থামিসনারে

Image
মাঝে মাঝে ইচ্ছেগুলো এত প্রবল হয়ে যে মাথা পুরা আওলা হয়ে যায়। পৃথিবীর যে কোনো মূল্যে তখন ইচ্ছেটাকেই পেতে ইচ্ছে করে। এখন এই গরমের শুরুতে আমি এখন ঝুম বৃষ্টি কোথায় পাই? কিন্তু ঝুম বৃষ্টি যে এখন আমার যে কোনো মূল্যে চাইই চাই। মনটা খারাপ হতে শুরু করে। প্রথমে একটু। তারপর আস্তে আস্তে প্রবল মন খারাপ। ফূল ভল্যুমে শাফিনকে গলা সাধার অনুমতি দিয়ে কানের পর্দা ফেটে ফেলার অবস্থা করেও মনকে ভুলানো গেলনা। শাওয়ারের নীচে দাঁড়িয়ে কলকে মুচড়ে দিলাম একদম পুরোপুরি। ঝরঝর করে নেমে এলো এক ঝর্ণা পানি। কিন্তু অনেক্ষন দাঁড়িয়ে থেকেও যে বৃষ্টি বৃষ্টি লাগেনা! হতাশ লাগে। আত্মা’র মত এই মনও এক রহস্যময় কিছু, কোনো কূলকিনারা পাইনা। চোখে পানি চলে আসে। এখন আমি বৃষ্টি কোথায় পাই? মায়ের জড়ায়ুর ভিতরে যেভাবে হাতপা গুটিয়ে থাকতাম, অনেকটা সেরকম করে বসে থাকি। হাটুর উপর রাখা দু’হাতের ভিতর মুখ লুকিয়ে চোখ বন্ধ করি। এবং তখনি টের পেলাম, যাদু! চোখ বন্ধ করতেই কান ধরে ফেলেছে ঝর্ণার পানিতে বৃষ্টির ঝর ঝর শব্দ! মুহূর্তে আমি হয়ে যাই দাদুর বাড়ির উঠোনে। আকাশ ভাংগা বৃষ্টি বুঝি একেই বলে! দাদুর বকা’র শব্দ শুনি আবছা। ওপাশের বড়দাদুর বাড়ি থেকে চাচীর ধমকের আওয়...

কালো লোকটার গাওয়া সে গানটা…

Image
(ছবি- কেনি রজার্স) Lady, I’m your knight in shining armor and I love you. You have made me what I am and I am yours. My love, there’s so many ways I want to say I love you. Let me hold you in my arms for evermore…. (http://www.youtube.com/watch?v=0HMfRte2VZE) ইংলিশ গান তেমন একটা শোনা হয়না। প্রথমতঃ বেশীরভাগ ইংলিশ গানই রক এন্ড রোল- ধুমধাড়াক্কা মার্কা, মাথা ধরে যায়। মনে হয় কানের কাছে একদল বানর আর বাঘ একসাথে শরীরের সব শক্তি দিয়ে চিৎকার করছে। দ্বিতীয়তঃ বাংলা গান শোনার পর আর অন্য কোনো ভাষায় গান শোনার ইচ্ছে থাকেনা। কিন্তু কিছু গান তার ভাষা আর কন্টেক্সট ছাঁড়িয়ে মনকে অদ্ভূদভাবে ছুঁয়ে যায়। কেনি রজারস’র লেডী গানটা অনেকটা তেমন। প্রথম গানটা শুনেছিলাম একটা স্টেশনে। দেশের বাইরের জীবনে কেন যেন অদ্ভূত ঘটনাগুলো সব ঘুরে ঘুরে একটা না একটা রেল স্টেশনেই এসে দাঁড়ায়। স্পষ্ট মনে আছে, সেদিন প্রথম পেনরিথ ক্যাম্পাস গিয়েছিলাম। বাসা থেকে এত দূরে, তারউপর প্রশাসনিক জটিলতায় ক্লান্ত, বিধ্বস্থ, এবং দিনশেষে ক্ষুধার্থ। স্টেশন থেকে বের হয়ে কিছু কিনে খাওয়ার অর্থ আবার টিকেট কাটা! কাঠের বেঞ্চিতে বসে যখন চোখ বন্ধ করে ঝিমুচ্ছি...

ভাঙ্গে ঢেউ, ভাঙ্গি আমি।

রুনা’পু আর আমি বসে আছি। আপু ‘চল’ বলেই হঠাত ধরে আনলো সমুদ্রের কাছে। আকাশ হালকা নীল হালকা সাদা। অফিস-ডে। তাই মানুষজন কম। যাও আছে সব জোড়া জোড়া। ওরা অন্যদেরকে বিরক্ত করেনা, নিজেরাও বিরক্ত হতে পছন্দ করেনা। বিরাট একটা পাথরের উপর পা ঝুলিয়ে বসেছি। এখন ভাটা। ‘রুনা’পু, গান গাইতে মন চাইছে!’ ‘গাইতে মন চাইছে, গাও! আশেপাশেও তো কেউ নেই। তবে’ বলেই উনি হাসতে শুরু করলেন,‘ ঐ যে একটা কুকুর আছে!’ অতএব একজন কুকুর স্রোতার উপস্থিতিতে আমরা দু’জন গলা ছাড়লাম। তুমি চেয়ে আছো তাই/ আমি পথে হেঁটে যাই/ হেঁটে হেঁটে বহুদূর/ বহুদূর যেতে চাই………… চার লাইন তখনো শেষ হয়নি, দেখি কুকুরটা বালু থেকে উঠে লেজ থেকে বালু ঝাড়তে ঝাড়তে আড়মোড়া ভাংগছে! বুঝলাম, আমার হাসের মত প্যাক প্যাক গলা তার পছন্দ হয়নি। দমে গেলাম। কিন্তু রুনা’পু থামলেন না। ……… আজি ঝরঝর মুখর বাদর দিনে/ জানিনে জানিনে/ কিছুতে কেন যে মন লাগেনা লাগেনা/ আজি ঝরঝর মুখর বাদর দিনে………… বৃষ্টি নেই। তবুও গানটা শুনে কেন মনে হল বৃষ্টি হচ্ছে! এমনকি ঝুম ঝুম বৃষ্টির আওয়াজ পর্যন্ত যেন শুনতে পাচ্ছি! দূরে একদম নেভালের সীমান্ত ঘেষেঁ সমুদ্রের বালুতে চার/পাঁচটা স্থানীয় ছোট ছেলে ফুটবল খেলেছে। হ...